রোহিঙ্গা সংকটকে বাংলাদেশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে আখ্যা দিয়ে বিশ্বনেতাদের প্রতি প্রত্যাবাসনে সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারপ্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, “বিশ্বব্যাপী শান্তি ও স্থিতিশীলতা ছাড়া টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়।”
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) কাতারের দোহায় আয়োজিত ‘আর্থনা শীর্ষ সম্মেলন ২০২৫’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের প্রসঙ্গ টেনে ড. ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশে দেখা গেছে এক ঐতিহাসিক তরুণ-নেতৃত্বাধীন গণআন্দোলন, যা বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ থেকে পরিণত হয় সুবিচার, সুশাসন ও জবাবদিহিতার এক দেশব্যাপী আন্দোলনে। এটি ছিল এক প্রজন্মের জোরালো দাবি—মর্যাদা, স্বচ্ছতা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসনের পক্ষে।”
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরির ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, “সত্যিকারের অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গড়তে হলে সবাইকে নিয়ে একসাথে কাজ করতে হবে।”
বিশ্বব্যাপী চলমান সংকটের কথা উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, “আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এমন এক পৃথিবী রেখে যেতে হবে, যা হবে সমৃদ্ধ, সহনশীল, সবুজ ও টেকসই—যেখানে ঐতিহ্য, উদ্ভাবন ও প্রযুক্তির সমন্বয়ে গড়ে উঠবে সর্বজনীন স্থায়িত্ব।”
তিনি কাতার সরকারের প্রশংসা করে বলেন, “টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যৎ গঠনে কাতার যে দৃষ্টিভঙ্গি ও সংকল্প দেখিয়েছে, তা অনুকরণীয়।”
এসময় সম্মেলন ৬টি উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা। সেগুলো হলো— আর্থিক অন্তর্ভুক্তি সম্প্রসারণ, সামাজিক ব্যবসা প্রসার, তরুণদের নেতৃত্বে প্ল্যাটফর্ম সৃষ্টি, শান্তি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, উন্নত দেশগুলোর নৈতিক দায়িত্ব পালনে সহযোগিতা এবং শূন্য-লাভ নির্ভর সামাজিক ব্যবসা ও শূন্য বর্জ্য নির্ভর জীবনধারার প্রচলন।
তিনি বলেন, “এই উদ্যোগগুলোই হতে পারে একটি ন্যায়ভিত্তিক, সহনশীল ও টেকসই ভবিষ্যতের পথপ্রদর্শক।”